কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম খুনের বিচার হবে
এহসান বিন মুজাহির;
নিরপরাধ মানুষ হত্যা জঘন্যতম একটি মহাপাপ। একটি অবৈধ হত্যাকাণ্ড গোটা মানব জাতিকে হত্যার শামিল। ইসলামে হত্যা যেভাবে মহাপাপ, তদ্রূপ রাষ্ট্রীয় আইনেও গুরুতর একটি অপরাধ। যারা বৈধ কারণ ছাড়া আল্লাহ কর্তৃক নিষিদ্ধ প্রাণকে হত্যা করে, তারা মহাপাপী। যে একটা প্রাণকে বাঁচাল সে যেন গোটা মানব জাতিকে বাঁচাল। মহান আল্লাহ এরশাদ করেন- 'নরহত্যা কিংবা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কাজ করা ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন দুনিয়ার সব মানুষকেই হত্যা করল। আর যে কারও প্রাণ রক্ষা করল, সে যেন সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল (সুরা মায়েদা :৩২)। পবিত্র কোরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ আরও এরশাদ করেন- যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো মুসলমানকে হত্যা করবে, তার শাস্তি জাহান্নাম, তাতেই সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হন, তাকে অভিশাপ দেন এবং তার জন্য ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন (সুরা আন নিসা :৯৩)। কোরআনুল কারিমে এরশাদ হয়েছে- 'যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সঙ্গে বিদ্রোহ করে এবং দেশের মধ্যে কোনো ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে, তাদের শাস্তি হচ্ছে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া অথবা তাদের হাত-পা বিপরীতভাবে কেটে ফেলা কিংবা তাদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া আর এটা হচ্ছে দুনিয়ার শাস্তি। তবে আখেরাতের শাস্তি তার জন্য নির্ধারিত রয়েছে (সুরা মায়েদা : ১৪)। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন- 'আর যারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য উপাস্যের ইবাদত করে না, আল্লাহ কর্তৃক নিষিদ্ধ প্রাণকে যথার্থ কারণ ছাড়া হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না (আল্লাহর প্রিয় বান্দা তারাই)। আর যারা এসব করে তারা মহাপাপী। বিচার দিবসে তাদের শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে এবং সেখানে তারা অপমানিত হয়ে চিরকাল অবস্থান করবে। কিন্তু যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে তারা এবং নেক আমল করে ওই আজাব থেকে পরিত্রাণ পাবে (সুরা আল ফুরকান :৬৮-৭০)।
হজরত রাসুল (সা.) এরশাদ করেছেন- 'কোনো মুসলমানকে গালি দেওয়া গোনাহর কাজ আর তাকে হত্যা করা কুফরি (বোখারি : ৬০৪৪)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত- রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, 'যদি আসমান-জমিনের প্রত্যেকেই কোনো মোমিন হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকে, তাহলে প্রত্যেককেই জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে (তিরমিজি : ১৮৪৩)। ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত- রাসুল (সা.) এরশাদ করেছেন, 'কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম খুনের বিচার করা হবে (মুসলিম :১৭৩৪)। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) নবী করিম (সা.) থেকে বর্ণনা করেন- তিনি বলেছেন, 'কেয়ামতের দিন নিহত ব্যক্তি তার হত্যাকারীর চুলের মুঠো ও মাথা ধরে আল্লাহর দরবারে এমন অবস্থায় হাজির হবে যে, তখন তার রগগুলো থেকে রক্ত পড়তে থাকবে। সে ফরিয়াদ করবে, হে আমার প্রভু, এই ব্যক্তিই আমাকে হত্যা করেছে। এই বলতে বলতে সে আরশের নিকটবর্তী হয়ে যাবে (তিরমিজি :২৩৭৮)। রাসুল (সা.) এরশাদ করেন- 'জুলুম কেয়ামতের দিন অন্ধকার হয়ে তোমার কাছে আসবে (ইবনে মাজাহ :১৭৯১)। রাসুল (সা.) আরও এরশাদ করেন- 'ওই ব্যক্তি পূর্ণাঙ্গ মোমিন নয়, যার মুখ ও হাত থেকে অপর কোনো মোমিন নিরাপদ নয় (বোখারি :২১৩১)। রাসুল (সা.) আরও বলেন- 'সে আমার উম্মত নয়, যে আমার অন্য কোনো উম্মতকে অবৈধভাবে হত্যা করে (আবু দাউদ :১৯২১)। রাসুল (সা.) আরও এরশাদ করেন- 'দুনিয়ায় যে ব্যক্তি যাকে হত্যা করবে, সে ব্যক্তি কেয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে এসে সেই খুনি ব্যক্তি সম্পর্কে বলবে যে, সে আমার হত্যাকারী, আমি তার বিচার চাই (মুসলিম :২৩৬৭)।
প্রিন্সিপাল, শ্রীমঙ্গল আইডিয়াল স্কুল মৌলভীবাজার
ahsanbinmujahir@gmail.com
নিরপরাধ মানুষ হত্যা জঘন্যতম একটি মহাপাপ। একটি অবৈধ হত্যাকাণ্ড গোটা মানব জাতিকে হত্যার শামিল। ইসলামে হত্যা যেভাবে মহাপাপ, তদ্রূপ রাষ্ট্রীয় আইনেও গুরুতর একটি অপরাধ। যারা বৈধ কারণ ছাড়া আল্লাহ কর্তৃক নিষিদ্ধ প্রাণকে হত্যা করে, তারা মহাপাপী। যে একটা প্রাণকে বাঁচাল সে যেন গোটা মানব জাতিকে বাঁচাল। মহান আল্লাহ এরশাদ করেন- 'নরহত্যা কিংবা পৃথিবীতে ধ্বংসাত্মক কাজ করা ছাড়া কেউ কাউকে হত্যা করলে সে যেন দুনিয়ার সব মানুষকেই হত্যা করল। আর যে কারও প্রাণ রক্ষা করল, সে যেন সব মানুষের প্রাণ রক্ষা করল (সুরা মায়েদা :৩২)। পবিত্র কোরআনুল কারিমে মহান আল্লাহ আরও এরশাদ করেন- যে ব্যক্তি ইচ্ছাকৃতভাবে কোনো মুসলমানকে হত্যা করবে, তার শাস্তি জাহান্নাম, তাতেই সে চিরকাল থাকবে। আল্লাহ তার প্রতি ক্রুদ্ধ হন, তাকে অভিশাপ দেন এবং তার জন্য ভীষণ শাস্তি প্রস্তুত করে রেখেছেন (সুরা আন নিসা :৯৩)। কোরআনুল কারিমে এরশাদ হয়েছে- 'যারা আল্লাহ ও তাঁর রাসুলের সঙ্গে বিদ্রোহ করে এবং দেশের মধ্যে কোনো ফ্যাসাদ সৃষ্টি করে, তাদের শাস্তি হচ্ছে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া অথবা তাদের হাত-পা বিপরীতভাবে কেটে ফেলা কিংবা তাদের দেশ থেকে তাড়িয়ে দেওয়া আর এটা হচ্ছে দুনিয়ার শাস্তি। তবে আখেরাতের শাস্তি তার জন্য নির্ধারিত রয়েছে (সুরা মায়েদা : ১৪)। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ বলেন- 'আর যারা আল্লাহর সঙ্গে অন্য উপাস্যের ইবাদত করে না, আল্লাহ কর্তৃক নিষিদ্ধ প্রাণকে যথার্থ কারণ ছাড়া হত্যা করে না এবং ব্যভিচার করে না (আল্লাহর প্রিয় বান্দা তারাই)। আর যারা এসব করে তারা মহাপাপী। বিচার দিবসে তাদের শাস্তি দ্বিগুণ করা হবে এবং সেখানে তারা অপমানিত হয়ে চিরকাল অবস্থান করবে। কিন্তু যারা তওবা করে বিশ্বাস স্থাপন করে তারা এবং নেক আমল করে ওই আজাব থেকে পরিত্রাণ পাবে (সুরা আল ফুরকান :৬৮-৭০)।
হজরত রাসুল (সা.) এরশাদ করেছেন- 'কোনো মুসলমানকে গালি দেওয়া গোনাহর কাজ আর তাকে হত্যা করা কুফরি (বোখারি : ৬০৪৪)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত- রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করেন, 'যদি আসমান-জমিনের প্রত্যেকেই কোনো মোমিন হত্যার সঙ্গে জড়িত থাকে, তাহলে প্রত্যেককেই জাহান্নামের শাস্তি ভোগ করতে হবে (তিরমিজি : ১৮৪৩)। ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত- রাসুল (সা.) এরশাদ করেছেন, 'কেয়ামতের দিন সর্বপ্রথম খুনের বিচার করা হবে (মুসলিম :১৭৩৪)। হজরত ইবনে আব্বাস (রা.) নবী করিম (সা.) থেকে বর্ণনা করেন- তিনি বলেছেন, 'কেয়ামতের দিন নিহত ব্যক্তি তার হত্যাকারীর চুলের মুঠো ও মাথা ধরে আল্লাহর দরবারে এমন অবস্থায় হাজির হবে যে, তখন তার রগগুলো থেকে রক্ত পড়তে থাকবে। সে ফরিয়াদ করবে, হে আমার প্রভু, এই ব্যক্তিই আমাকে হত্যা করেছে। এই বলতে বলতে সে আরশের নিকটবর্তী হয়ে যাবে (তিরমিজি :২৩৭৮)। রাসুল (সা.) এরশাদ করেন- 'জুলুম কেয়ামতের দিন অন্ধকার হয়ে তোমার কাছে আসবে (ইবনে মাজাহ :১৭৯১)। রাসুল (সা.) আরও এরশাদ করেন- 'ওই ব্যক্তি পূর্ণাঙ্গ মোমিন নয়, যার মুখ ও হাত থেকে অপর কোনো মোমিন নিরাপদ নয় (বোখারি :২১৩১)। রাসুল (সা.) আরও বলেন- 'সে আমার উম্মত নয়, যে আমার অন্য কোনো উম্মতকে অবৈধভাবে হত্যা করে (আবু দাউদ :১৯২১)। রাসুল (সা.) আরও এরশাদ করেন- 'দুনিয়ায় যে ব্যক্তি যাকে হত্যা করবে, সে ব্যক্তি কেয়ামতের দিন আল্লাহর কাছে এসে সেই খুনি ব্যক্তি সম্পর্কে বলবে যে, সে আমার হত্যাকারী, আমি তার বিচার চাই (মুসলিম :২৩৬৭)।
প্রিন্সিপাল, শ্রীমঙ্গল আইডিয়াল স্কুল মৌলভীবাজার
ahsanbinmujahir@gmail.com
No comments